কক্সবাংলা সম্পাদকীয়(১ ডিসেম্বর) :: বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে আলাদা করেছে নাফ নদ। নদের এপারে বাংলাদেশের টেকনাফ। আর ওপারে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাজ্য রাখাইনের মংডু শহর।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার আর্মি ও বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত দীর্ঘদিনের।
তাদের মধ্যে সংঘাত যখনই জোরালো হয়, তখনই তা টের পায় বাংলাদেশও। এই দফায়ও সেটি হয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও কর্মকর্তারা।
সেখানে দুপক্ষের মাঝে এখন গোলাগুলি হচ্ছে, বিমান হামলা চলছে।
সীমান্তে আতঙ্ক সৃষ্টি হলে তা সন্দেহাতীতভাবেই উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে- যা আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য বলেই প্রতীয়মান হয়।
প্রসঙ্গত, টেকনাফ সীমান্তের মানুষের জন্য নতুন আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি।
তথ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার রাতভর একের পর এক মিয়ানমারে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এর বিকট শব্দে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
টেকনাফ সীমান্তবর্তী স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে তারা এত জোরালো শব্দ শোনেননি।
তাদের ভাষ্য হচ্ছে, দিনের বেলায় সবকিছু মোটামুটি শান্ত থাকলেও গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সীমান্তের ওপার থেকে প্রতি রাতে বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে।
এর মাঝে গত বৃহস্পতিবারের বিস্ফোরণ সবচেয়ে ‘ভীতিকর’ ছিল। প্রতিটি শব্দের পর টেকনাফ কেঁপেছে।
তারা দাবি করেন, এই সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। এটা যদি সাময়িক হতো, তাহলে তেমন উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয় ছিল না। কিন্তু এটি এখন নিয়মিত হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফের চারপাশ বা সেন্টমার্টিনের আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে। মাঝখানে বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল।
এখন আবার শোনা গেল। আমরা বিজিবির সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, সেখানে এয়ার স্ট্রাইক হয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারে এখন যে ধরনের সংঘর্ষ চলছে এবং মিয়ানমার আর্মি যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে যে এটি একটি ‘স্মার্ট মুভ’ হবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমার আর্মি আরাকান আর্মিকে মোকাবিলা করার জন্য রোহিঙ্গাদের নিয়োগ দিয়েছে।
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মিয়ানমারের রাখাইনে জান্তা বাহিনী এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে- এটাকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে চলা সংঘাতের আঁচ এসে লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চলে বিভিন্ন সময়েই।
সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, মিয়ানমারের ঘটনার দিকে বাংলাদেশ সংশ্লিষ্টদের নজর রাখতে হবে এবং সীমান্তে সতর্ক অবস্থান বজায় রাখাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, সরকার সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেবে।
Posted ১:০৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta